কবিতা- “অধরা ভালোবাসার উপাখ্যান”

“অধরা ভালোবাসার উপাখ্যান”
সুমিতা পয়ড়্যা

 

 

ভালোবাসার রুদ্ধদ্বার খুলে দাও প্রহরী!
স্বপ্নের অরূপ রতনকে সাজিয়েছিলাম সংগোপনে
গাঁথা মালা পরাবো বলে হারিয়েছি বারংবার।
কখনো অভিমানের সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে
কখনো অপরাজিতা জন্ম জন্মান্তরে;
যতবার ভালোবেসে গড়েছি অন্তস্তলে শাশ্বত চিরন্তন সত্যকে–সে আমার প্রেম।
এক দুর্নিবার আকর্ষণ!
অধরা জ্যোৎস্না ভেসে যায়—
অধরা সময় বয়ে চলে আপন স্রোতে–
চেতনা জুড়ে শুধু এক সৌম্যকান্তি অবয়ব–
যা অনন্য সুন্দর।

অধরা মেঘে মেঘমল্লার রাগে তানের ঝড় ওঠে
পাহাড়ি মেঘে ঘন কালো কুয়াশার আবরণ
অস্থির সময়ে উষ্ণতার আলতো ছোঁয়া
তবু অধরা বাস্তব মুহূর্তগুলোকে ভাগ করে,
সমস্ত সত্তা জুড়ে অধরা ভালোবাসার উপাখ্যান,
দূরে দুরান্তে ছুটে চলা অধরা ভালোবাসার গন্তব্যহীন ব্যাকুলতায়।
ভরসার জলাধার পূর্ণ অধরা ভালবাসার প্লাবনে
অবিরাম অশ্রুধারা অধরা বিশ্বাসে
হৃদপিন্ডের অধরা গতি তখনো প্রাবল্যের কথা বলে।

ওগো চির সখা কালের প্রবাহে এগিয়ে চলেছি চিরন্তন সত্যের দিকে—
এখনো বিষন্নতার একাকিত্বে দাঁড়িয়ে দিন গোনা
নীল আকাশের নিচে নিঃসঙ্গতা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে
গভীর রাত্রির নির্জনতায় অসহায়তার গান।
একবার ভালোবাসার রুদ্ধদ্বার খুলে দেখো–বিষন্নতার ছোঁয়াচ পার হওয়া চাহনি!
আর রুদ্ধদ্বার নয়; অধরা অতৃপ্তের অনাবিল স্বপ্নে জাগরনের গান–
সুরের মূর্ছনায় চির জাগরুক হয়ে উঠুক।
সমাগত প্রায় বসন্তের দোলা লাগুক প্রাণে।
অধরা ভালোবাসা ভেসে যাক চরাচরে।
সুন্দর হয়ে উঠুক সত্যেরা।
সৃষ্টি হোক কল্যাণকর।

দিগন্তব্যাপী বিরহী মনে চাতকের উদাস চাহনি
অধরা স্রোতে অপেক্ষারা ডুব দেয় আঁধারে,
ক্লান্ত চোখে অধরা ঘুম; শুধু অপলক চেয়ে থাকা,
মন জুড়ে ভালোবাসার অধরা স্বপ্নরা রাতের তারার মত খসে পড়ে এক অলিক কল্পনায়
জন্মেছে অধিকারবোধ শেষ বিকেলের এক চিলতে আলোয়।
অধরা বন্ধন বাঁধা পড়ে আছে রূপকথায়–
সোনার কাঠি রুপোর কাঠি ছুয়ে দিলেই অনুভবের দ্বারে অধরা মুক্তির আনন্দ।

ভালোবাসার রুদ্ধ দ্বার খুলে দাও প্রহরী!
একবার দক্ষিণা বাতাস আসুক ছিন্ন ভিন্ন হৃদয়ে
একবার কাছাকাছি এসে দোঁহে মিলি
একবার নীরবে নিভৃতে ভালোবাসি
এক অদ্ভুত মুগ্ধতা খুঁজে ফিরি এই গোপন অধরা ভালবাসায়।

Loading

Leave A Comment